প্রয়াত কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদের একটি চিত্রনাট্য অবলম্বনে নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘সুব্রত সেনগুপ্ত’ মুক্তি পেয়েছে। তরুণ নির্মাতা আবীর ফেরদৌস মুখর পরিচালিত ২৫ মিনিটের এই চলচ্চিত্রটি বৃহস্পতিবা (২ মে) ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকিতে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। নব্বই দশকের শেষভাগের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে এক তরুণের বেড়ে ওঠার গল্প তুলে ধরেছে এই চলচ্চিত্র।
‘সুব্রত সেনগুপ্ত’ নামের চরিত্রটির শৈশব থেকে কৈশোর পর্যন্ত। যেখানে তার জীবনে পরিবার, সমাজ, ধর্ম, প্রেম এবং রাজনীতির মতো বিষয়গুলো গভীর প্রভাব ফেলে, সেই টানাপোড়েনের চিত্রই এই চলচ্চিত্রের মূল উপজীব্য। চলচ্চিত্রটির গল্প নেওয়া হয়েছে সেলিম মোরশেদের লেখা থেকে, যা প্রথমে আনোয়ার আহমেদের সম্পাদিত ‘রুপম’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল।
পরবর্তীতে ১৯৮৮ সালে তপন বড়ুয়া সম্পাদিত ‘গাণ্ডীব’ পত্রিকার দ্বিতীয় সংখ্যায় মূল গল্পের পাশাপাশি তারেক মাসুদের লেখা চিত্রনাট্যটিও প্রকাশিত হয়। কবি সাজ্জাদ শরিফ চিত্রনাট্যটির ভাষাগত সৌকর্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছিলেন।
প্রায় ছয় বছর আগে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন লোকেশনে ছবিটির শুটিং শুরু হয়েছিল। ক্রাউড ফান্ডিং এবং বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের আর্থিক সহায়তায় ধাপে ধাপে এর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়।
চলচ্চিত্রটিতে নাম ভূমিকায়, অর্থাৎ সুব্রত সেনগুপ্ত চরিত্রে অভিনয় করেছেন আহসান স্বরণ। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা যাবে আশিক সালেহীন, ফারিহা, আফরা এবং ফাহমিদ ফারাবী শাওনসহ আরও অনেককে।
নির্মাণের পেছনের কারিগরদের মধ্যে ছিলেন আর্ট ডিরেক্টর হিসেবে মিফতাহ আল ইহসান, সম্পাদক হিসেবে আফজাল সিদ্দিক সন্ত, লাইন প্রডিউসার হিসেবে তানশু জুবেরিয়া, সাউন্ড মিক্সিংয়ে রাজেশ সাহা এবং সংগীতে চিত্রপট। কুষ্টিয়া টিমের ফাহিম হাসান, অরিজিত, সবুজ এবং বাহাউদ্দিন সেতু নির্মাণ প্রক্রিয়ায় বিশেষভাবে সহায়তা করেছেন।
পরিচালক আবীর ফেরদৌস মুখর জানান, তারেক মাসুদ মেমোরিয়াল ট্রাস্টে কাজ করার সুবাদে তিনি এই চিত্রনাট্যটির সন্ধান পান। তারেক মাসুদের স্ত্রী এবং নির্মাতা ক্যাথরিন মাসুদের অনুমতি নিয়েই কাজটি শুরু করেন তিনি।
মুখর বলেন, ‘মূল চিত্রনাট্যের আবহ ধরে রেখে আমরা নিজেদের ভাবনা যোগ করার চেষ্টা করেছি। টিমের সবার অক্লান্ত পরিশ্রম ছাড়া এটা সম্ভব হতো না।’
তিনি আরও বলেন, ‘চরকি প্ল্যাটফর্মকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই তরুণ নির্মাতাদের এ ধরনের সাহসী গল্প বলার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।’
মুক্তি পাওয়ার আগেই চলচ্চিত্রটি গ্লোবাল ইউথ ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সেরা পরিচালকের পুরস্কার জিতেছে এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়ে প্রশংসিত হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এএজে